বিশ্বব্যাপী নতুন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে, এদের অধিকাংশই চীনের নাগরিক এবং সেখানে এ রোগটিতে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শনিবার চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, চীন ‘গুরুতর পরিস্থিতির’ মোকাবিলা করছে।
নতুন ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো জরুরিভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
গত বছরের শেষ দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে, যেখানে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বিক্রি করা হয়, ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবকে ‘এখনি আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি’ বলে জানিয়েছিল, কিন্তু চীন এ প্রাদুর্ভাব সামাল দিতে পারবে কি না, কয়েকজন বিশেষজ্ঞ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
রোববার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভির প্রতিবেদনে চীন নতুন করোনাভাইরাসটিতে এক হাজার ৯৭৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে।
এই প্রাদুর্ভাবের কারণে এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার উহান শহরে জরুরি যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বেইজিংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লোকজনকে হাত না মেলানোর আহ্বান জানিয়েছে, তার বদলে হাত দিয়ে অভিবাদন জানানোর ঐতিহ্যবাহী ভঙ্গি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে। রোববার সকালে শহরের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী বাসিন্দাদের কাছে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার কানাডা উহান থেকে ফেরা এক নাগরিকের শরীরে ভাইরাসটি পাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। পঞ্চাশোর্ধ ওই ব্যক্তি ২২ জানুয়ারি টরন্টোতে ফেরার একদিন পর শ্বাসযন্ত্রের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নতুন চান্দ্রবর্ষ উদযাপন সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার থেকে চীন ১০টি শহরে গণপরিবহন ও সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর মন্দির বন্ধ করে দিয়েছে। পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য ‘নিষিদ্ধ শহর’ও মহাপ্রাচীরের একটি অংশও বন্ধ রাখা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম